Bengali Banjonsondhi Free PDF Download ।। বাংলা ব্যাঞ্জনসন্ধি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা
Bengali Banjonsondhi Free PDF Download
Bengali Banjonsondhi Free PDF Download |
১। ব্যঞ্জনসন্ধি কাকে বলে ?
উঃ- ব্যঞ্জনধ্বনির সঙ্গে ব্যঞ্জনধ্বনির অথবা ব্যঞ্জনধ্বনির সঙ্গে স্বরধ্বনির কিংবা স্বরধ্বনির সঙ্গে ব্যঞ্জনধ্বনির মিলনে যে সন্ধি হয় তাকে ব্যঞ্জনসন্ধি বলে।
উদাহরণ - দিক্ + অন্ত = দিগন্ত
বর্ণ বিশ্লেষণ করলে হয় -
দ+ই+ক+অ+ন+ত+অ - প্রথম পদের শেষে থাকা ব্যঞ্জনবর্ণ 'ক' এর সঙ্গে পরপদের প্রথমে থাকা স্বরবর্ণ 'অ' এর সন্ধি হয়ে ‘গ’ হয়েছে ।
স্বরসন্ধির মত ব্যঞ্জনসন্ধিরও বেশ কতকগুলি সূত্র আছে যেগুলি জানলে আমাদের সমস্ত প্রকার ব্যঞ্জনসন্ধি আয়ত্তে এসে যাবে সেই সূত্রগুলি নিম্নে বর্ণিত হল -
উদাহরণ -
বাক্ + দান = বাগদান
সূত্র - ২ : পূর্বপদ এর শেষে যদি বর্গের প্রথম ধ্বনি অর্থাৎ ক্, চ্, ট্, ত্, প্ থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি যদি বর্গের পঞ্চম ধ্বনি অর্থাৎ ঙ, ঞ, ণ, ন, ম থাকে তাহলে পূর্বপদের শেষে থাকা বর্ণগুলি সেই বর্গেরই পঞ্চম বর্ণে রূপান্তরিত হয়।
উদাহরণ -
বাক্ + ময় = বাঙময়
সূত্র - ৩ : পূর্বপদের শেষে 'ম্' এবং পরপদের প্রথমে 'ন্' থাকলে দুইয়ে মিলে 'ন্ন' হয়।
উদাহরণ -
সম্ + নিহিত = সন্নিহিত
সূত্র - ৪ : পূর্বপদ-এর শেষ বর্ণ 'ত্' বা 'দ্' হলে এবং পরপদের প্রথম বর্ণ 'হ' হলে সন্ধিবদ্ধ অবস্থায় দুটি বর্ণই পৃথক রূপ ধারণ করে। 'ত্' বা 'দ্' হয়ে যায় 'দ্' এবং 'হ' হয় 'ধ' । উভয় মিলে 'দ্ধ' হয়।
উদাহরণ -
উৎ + হার = উদ্ধার
সূত্র - ৫ : পূর্বপদের শেষে যদি 'ত্' বা 'দ্' থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'চ' বা 'ছ' থাকে তাহলে 'ত্' বা 'দ্' স্থানে 'চ্' হয়। এবং পরপদে থাকা 'চ' বা 'ছ'- এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে 'চ্চ' বা 'চ্ছ' হয়।
উদাহরণ -
সৎ + চরিত্র = সচ্চরিত্র
উৎ + চারণ = উচ্চারণ
সূত্র - ৬ : পূর্বপদের শেষে যদি 'ত্' বা 'দ্' থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'জ' বা 'ঝ' থাকে তাহলে 'ত্' বা 'দ্' স্থানে 'জ' হয়। এবং পরপদে থাকা 'জ' বা 'ঝ'- এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে 'জ্জ' বা 'জ্ঝ' হয়।
উদাহরণ -
উৎ + জ্বল = উজ্জ্বল
সূত্র - ৭ : পূর্বপদের শেষে যদি 'ত্' বা 'দ্' থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'ট' বা 'ঠ' থাকে তাহলে 'ত্' বা 'দ্' স্থানে 'ট' হয়। এবং পরপদে থাকা 'ট' বা 'ঠ'- এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে 'ট্ট' বা 'টঠ' হয়।
উদাহরণ -
তদ্ + টীকা = তট্টীকা
সূত্র - ৮ : পূর্বপদের শেষে যদি 'ত্' বা 'দ্' থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'ড্' থাকে তাহলে 'ত্' বা 'দ্' স্থানে 'ড্' হয়। এবং পরপদে থাকা 'ড্'- এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে 'ড্ড' হয়।
উদাহরণ -
উৎ + ডীন = উড্ডীন
সূত্র - ৯ : পূর্বপদের শেষে যদি 'ত্' বা 'দ্' থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'ল' থাকে তাহলে 'ত্' বা 'দ্' স্থানে 'ল্' হয়। এবং পরপদে থাকা 'ল্'- এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে 'ল্ল' হয়।
উদাহরণ -
সূত্র - ১০ : পূর্বপদের শেষে যদি 'ত্' বা 'দ্' থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'শ' থাকে তাহলে 'ত্' বা 'দ্' স্থানে 'চ্' হয়। এবং 'শ্'- এর জায়গায় 'ছ' হয়।
উদাহরণ -
সূত্র - ১১ : পূর্বপদের শেষে যদি 'চ' বা 'জ' থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'ণ' বা 'ন' থাকে তাহলে 'ণ' বা 'ন' স্থানে 'ঞ' হয়।
উদাহরণ -
সূত্র - ১২ : পূর্বপদের শেষে যদি 'ন' থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'শ', 'ষ', 'স' কিংবা 'হ' থাকে তাহলে 'ন' স্থানে 'ং' হয়।
উদাহরণ -
সূত্র - ১৩ : পূর্বপদের শেষে যদি 'ষ্' থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'ত' বা 'থ' থাকে তাহলে তা যথাক্রমে 'ট' এবং 'ঠ' - এ রূপান্তরিত হয়।
উদাহরণ -
সূত্র - ১৪ : পূর্বপদের শেষে যদি 'ত্ (ৎ)' বা 'দ্' থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'ন' বা 'ম' থাকে তাহলে 'ত' এবং 'দ' স্থানে 'ন' হয়।
উদাহরণ -
সূত্র - ১৫ : পূর্বপদ এর শেষে যদি বর্গের প্রথম ধ্বনি (ক্, চ্, ট্, ত্, প্) থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'ন' থাকে তাহলে প্রথম ধ্বনি বা বর্ণের স্থানে সেই বর্গেরই তৃতীয় বা পঞ্চম ধ্বনি হয়।
উদাহরণ -
সূত্র - ১৬ : পূর্বপদ-এর শেষে যদি বর্গের প্রথম ধ্বনি থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'ম্' থাকে তাহলে প্রথম ধ্বনির জায়গায় সেই বর্গেরই তৃতীয় বা পঞ্চম ধ্বনি হয়।
উদাহরণ -
সূত্র - ১৭ : পূর্বপদের শেষে যদি 'ম' থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি অন্তঃস্থ ধ্বনি (য্, র্, ল্, ব্) বা উষ্মধ্বনি (শ্, ষ্, স্, হ্ )থাকে তাহলে 'ম' স্থানে 'ং' হয়।
উদাহরণ -
সম্ + হার = সংহার
সূত্র - ১৮ : পূর্বপদের শেষে যদি 'সম্' উপসর্গ থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'কৃত' বা 'কার' থাকে তাহলে 'ম' স্থানে 'ং' হয় এবং 'স' - এর আগম ঘটে।
উদাহরণ -
সূত্র - ১৯ : পূর্বপদের শেষে যদি 'পরি' উপসর্গ থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'কৃত' বা 'কার' থাকে তাহলে 'ষ' - এর আগম ঘটে।
উদাহরণ –
সূত্র - ২০ : পূর্বপদের শেষে যদি বর্গের তৃতীয় বা চতুর্থ ধ্বনি থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি বর্গের প্রথম বা দ্বিতীয় ধ্বনি কিংবা 'শ' , 'ষ' , 'স' থাকে তাহলে তৃতীয় বা চতুর্থ ধ্বনির জায়গায় সেই বর্গেরই প্রথম ধ্বনি বা বর্ণ হয়।
উদাহরণ -
ক্ষুধ্ + পিপাসা = ক্ষুৎপিপাসা ( এখানে 'ৎ' - কে 'ত' হিসেবে ধরা হয়ে থাকে )
সূত্র : পূর্বপদের শেষে যদি 'অ', 'আ', 'ই', বা 'উ' থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'ছ' থাকে তাহলে 'ছ'-এর জায়গায় চ্ছ' হয় ।
উদাহরণ -
ভাষা + ছন্দ = ভাষাচ্ছন্দ
সূত্র : পূর্বপদের শেষে যদি বর্গের প্রথম ধ্বনি বা বর্ণ থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি কোন স্বরধ্বনি থাকে তাহলে বর্গের প্রথম ধ্বনি বা বর্ণের স্থানে সেই বর্গেরই তৃতীয় বর্ণ হয় ।
উদাহরণ -
ষট্ + আনন = ষড়ানন
এতক্ষণ আমরা সূত্র অনুযায়ী ব্যঞ্জনসন্ধি শিখলাম কিন্তু কিছু কিছু ব্যঞ্জনসন্ধি আছে যেগুলি কোন সূত্র মেনে হয় না এদের বলা হয় নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধি। এগুলি ব্যতিক্রমী।
উদাহরণ -
বন + পতি = বনস্পতি
আ + চর্য = আশ্চর্য
এক + দশ = একাদশ
ষট্ + দশ = ষোড়শ
উদাহরণ -
কাঁচা + কলা = কাঁচকলা
ঘোড়া + দৌড় = ঘোড়দৌড়
উদাহরণ -
জগৎ + জীবন = জগজীবন ( সংস্কৃতে - জগজ্জীবন)
সূত্র - ২ : পূর্বপদের শেষে যদি বর্গের প্রথম বা দ্বিতীয় ধ্বনি থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি বর্গের তৃতীয় বা চতুর্থ ধ্বনি থাকে তাহলে বর্গের প্রথম বা দ্বিতীয় ধ্বনির জায়গায় সেই বর্গেরই তৃতীয় ধ্বনি বা বর্ণ হয়।
উদাহরণ -
সূত্র - ৩ : পূর্বপদের শেষে যদি বর্গের তৃতীয় বা চতুর্থ ধ্বনি কিংবা 'ন' থাকে তাহলে সন্ধির সময় সেই বর্গেরই পঞ্চম ধ্বনি বা বর্ণ হয়।
উদাহরণ -
সূত্র - ৪ : পূর্বপদ এর শেষে যদি 'র্' থাকে তাহলে পরপদের প্রথমে থাকা ব্যঞ্জনধ্বনিটির দ্বিত্ব হয়।
উদাহরণ -
সূত্র - ৫ : পূর্বপদের শেষে যদি 'চ' থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'স্' বা 'শ্' থাকে তাহলে 'চ্' ধ্বনির জায়গায় 'স্' বা 'শ্' হয়।
উদাহরণ -
সূত্র - ৬ : পূর্বপদের শেষে যদি 'ৎ (ত্)' থাকে এবং পরপদের প্রথমে যদি 'স্' থাকে তাহলে উভয়ে মিলে 'চ্ছ' হয়।
উদাহরণ -
যেকোনো চাকরীর পরীক্ষার স্টাডি মেটিরিয়ালস বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে আসুন আমাদের সাইটে । এখানে আপনারা বিনামূল্যে সমস্ত PDF ফাইল ডাউনলোড করতে পারেন ।