ভারতীয় সংবিধানে রাষ্ট্রপরিচালনার নির্দেশমূলক নীতি গুলির শ্রেণীবিন্যাস
রাষ্ট্রপরিচালনার নির্দেশমূলক নীতি গুলির শ্রেণীবিন্যাস
v এগুলিকে
মূলত চারটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয় । প্রথম ভাগে
রয়েছে সামাজিক নীতি সমূহ, দ্বিতীয় ভাগ টি প্রশাসনিক নিয়ে আলোচিত হয়েছে, আর তৃতীয় ভাগ রয়েছে আর্থসামাজিক অধিকার,
চতুর্থ তথা শেষ ভাগে ভারত প্রজাতন্ত্রের আন্তর্জাতিক নীতি গুলি বর্ণনা করা হয়েছে ।
এই নীতিগুলি নিম্নে বর্ণিত হলোঃ
১। অনুচ্ছেদ ৩৮ -
জনসাধারণের কল্যাণের জন্য নিয়োজিত সামাজিক শৃঙ্খলা সুরক্ষিত ও সুনিশ্চিত করা ।
২। অনুচ্ছেদ ৩৯ - রাষ্ট্র বিশেষভাবে তার নীতি নির্ধারণ করবে এই
বিষয়গুলো নিশ্চিত করার জন্যঃ
(ক) সকল নাগরিকের জন্য
পর্যাপ্ত জীবিকা অর্জনের উপায় ব্যবস্থা করা ।
(খ) সকল মানুষের ভালোর জন্য
সম্পদের সমবন্টন।
(গ) জনসম্পদ যেন মুষ্টিমেয়
কয়েকজন এর হাতে কেন্দ্রীভূত না হয় ।
(ঘ) নারী ও পুরুষের মধ্যে
সমান কাজের জন্য সমান বেতনের অধিকার ।
(ঙ) শ্রমিকদের স্বাস্থ্য
রক্ষা করা ও বয়স বা কর্মক্ষমতা রক্ষে কর্মক্ষমতা পক্ষে উপযুক্ত নয় এমন পেশায়
কাজ করার জন্য কোনো নাগরিককে বাধ্য করা যাবে না ।
(চ) শিশু ও যুব সম্প্রদায়কে
বা নৈতিক ও জাগতিক অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করা ।
৩। অনুচ্ছেদ ৪০ - গ্রাম পঞ্চায়েত কে স্বশাসিত সংস্থা হিসেবে গড়ে
তোলা ।
৪। অনুচ্ছেদ ৪১ - বরিষ্ঠ নাগরিক ও অসুস্থ মানুষের জন্য কাজ শিক্ষা
ও জন-সহায়তার অধিকার সুরক্ষিত করা ।
৫। অনুচ্ছেদ ৪২ - কর্মক্ষেত্রে ন্যায্য ও মানবিক পরিস্থিতি ও
মাতৃত্বকালীন সুবিধা সুরক্ষিত করা ।
৬। অনুচ্ছেদ ৪৩ -
সকলের জন্য করমুক্ত বেতন স্বচ্ছন্দ জীবনযাপন ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সুযোগ নিশ্চিত
করা এবং বিশেষ করে কুটির শিল্পের উন্নতি সাধন করা ।
৭। অনুচ্ছেদ ৪৪ - সারা দেশের জন্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা ।
৮। অনুচ্ছেদ ৪৫ -
সংবিধান কার্যকর হবার ১০ বছরের মধ্যে ১৪ বছর পর্যন্ত বয়সী শিশুদের জন্য অবৈতনিক ও
বাধ্যতামূলক শিক্ষা দান ।
৯। অনুচ্ছেদ ৪৬ - সমাজের অনগ্রসর শ্রেণির তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের
শিক্ষা ও অর্থনৈতিক স্বার্থ সুরক্ষিত করা ।
১০। অনুচ্ছেদ ৪৭ - জনস্বার্থ সুরক্ষিত করা এবং পানীয় ও মাদকদ্রব্য
নিষিদ্ধ করা ।
১১। অনুচ্ছেদ ৪৮ - বিজ্ঞানসম্মতভাবে পশু পালন করা পশুর বংশ বৃদ্ধি
করা ও গরু-বাছুর এবং অন্যান্য ভারবাহী পশুর হত্যা নিষিদ্ধ করা ।
১২। অনুচ্ছেদ ৪৯ - ঐতিহাসিক ও জাতীয় সৌধগুলি রক্ষা করা ।
১৩। অনুচ্ছেদ
৫০ - শাসন বিভাগ থেকে
বিচার বিভাগকে পৃথকীকরণ ।
১৪। অনুচ্ছেদ ৫১ - নিম্নলিখিত বিষয়গুলি সুনিশ্চিত করা
(ক) আন্তর্জাতিক শান্তি ও
নিরাপত্তা উন্নীত করা । (খ)
অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে ন্যায্য ও সম্মানীয় সম্পর্ক বজায় রাখা ।
(গ) সালিশের মাধ্যমে
আন্তর্জাতিক বিতর্কের সমাধান করা ।
১৯৭৬ সালের ৪২
তম সংশোধনীর দ্বারা যুক্ত হওয়া নির্দেশমূলক নীতিঃ
অনুচ্ছেদ ৩৯
(ক) - আইনি ব্যবস্থা, সমান সুযোগ দান ও নিখরচায় আইনি সহায়তাদানের
মাধ্যমে ন্যায় বিচার দান করবে ।
অনুচ্ছেদ ৩৯
(চ) - শিশুদের মর্যাদাপূর্ণ ও স্বাধীন পরিবেশে স্বাস্থ্যকর ভাবে
বেড়ে ওঠার সুযোগ দিতে হবে এবং নৈতিক ও জাগতিক অবক্ষয়ের এবং শোষণের বিরুদ্ধে
যুবসমাজ ও শিশুদের রক্ষা করতে হবে ।
অনুচ্ছেদ ৪৩
(ক) - শিল্পে নিযুক্ত শ্রমিকদের পরিচালনা সমিতিতে যোগদানের সুযোগ
দিতে হবে ।
অনুচ্ছেদ ৪৮
(ক) – পরিবেশ, অরণ্য ও বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে হবে ।
১৯৭৮ সালের ৪৪ তম সংশোধনীর
মাধ্যমে যুক্ত নির্দেশমূলক নীতিঃ
অনুচ্ছেদ ৩৮
(ক) - রাষ্ট্রীয় যে শুধুমাত্র ব্যক্তির মধ্যে রোজগারের বৈষম্য ও
সামাজিক অবস্থানের বৈষম্য সুবিধা ও সুযোগের বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করবে তাই নয়,
বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর ও বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত মানুষের মধ্যেও
বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করবে ।
অন্যান্যভাগে উল্লেখিত নির্দেশমূলক নীতিঃ
অনুচ্ছেদ ৩৫০
(ক) - সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিশেষত শিশুদের মাতৃভাষায়
প্রাথমিক শিক্ষাদান প্রত্যেক রাজ্যের কর্তব্য ।
অনুচ্ছেদ
৩৫১ - কেন্দ্রের দায়িত্ব হল হিন্দি ভাষার প্রসার
বৃদ্ধি করা যা আমাদের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক উপাদান কে সমৃদ্ধ করবে ।
অনুচ্ছেদ ৩৫৫ - কেন্দ্র রাজ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত কৃত্যক
ও পদ্গুলিতে নিয়োগের সময় তপশিলি জাতি ও উপজাতির লোকেদের নিয়োগ করার বিষয়টি
বিবেচনা করতে হবে ।
আজকের PDF টি ডাউনলোড করতে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুন - Download PDF Click Here ।
রাষ্ট্রপরিচালনার নির্দেশমূলক নীতি গুলির শ্রেণীবিন্যাস সম্পর্কে জানুন ।