Latest

Tuesday, April 19, 2022

Dhoni Poribortoner Dhara or Riti PDF Download ।। ধ্বনি পরিবর্তনের ধারা বা রীতি (পর্ব- ১)

 Dhoni Poribortoner Dhara or Riti PDF Download

Dhoni Poribortoner Dhara or Riti PDF Download



Dhoni Poribortoner Dhara or Riti PDF Download

বন্ধুরা আজকে আমি তোমাদের সাথে শেয়ার করব Dhoni Poribortoner Dhara or Riti PDF Download ।। ধ্বনি পরিবর্তনের ধারা বা রীতি (পর্ব- ১) ।

ধ্বনি পরিবর্তনের ধারা বা রীতিঃ-

ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানীরা ভাষার ধ্বনি পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করে চারটি ধারা বা রীতি আবিষ্কার করেছেন । এগুলি হল – ১। ধ্বনির আগম । ২। ধ্বনির লোপ ৩। ধ্বনির স্থানান্তর বা বিপর্যাস ।

১। ধ্বনির আগমনঃ-

উচ্চারণ সহজ করার জন্য অনেক সময় শব্দের শুরুতে , মাঝে বা শেষে স্বরধ্বনি বা ব্যঞ্জন ধ্বনির আগমন ঘটে, একেই ধ্বনির আগম বলে ।

ধ্বনির আগম আবার দুই প্রকার – (ক) স্বরাগম এবং (খ) ব্যঞ্জনাগম ।

(ক) স্বরাগম বা স্বরধ্বনির আগমঃ- শব্দের শুরুতে, মাঝে বা শেষে স্বরধ্বনির আগমনকে স্বরাগম বলে ।

স্বরাগম আবার তিন প্রকার । যথা –

(i)আদি স্বরাগমঃ- শব্দের আদিতে বা শুরুতে স্বরধ্বনির আগমন ।

যেমন – স্ত্রী > ইস্তিরি

(ii)মধ্য স্বরাগমঃ- শব্দের মাঝে স্বরধ্বনির আগমন ।

যেমন – ভক্তি > ভকতি ।

(iii)অন্ত্য স্বরাগমঃ- শব্দের শেষে স্বরধ্বনির আগমন ।

যেমন – কড়া > কড়াই ।

(খ) ব্যঞ্জন ধ্বনির আগমঃ- শব্দের শুরুতে, মাঝে বা শেষে ব্যঞ্জন ধ্বনির আগমনকে ব্যঞ্জনাগম বলে । তবে স্বরধ্বনির মতো ব্যঞ্জন ধ্বনির আগম বেশি মেলে না ।

ব্যঞ্জনাগম তিন প্রকার । যথা –

(i)আদি ব্যঞ্জনাগমঃ- শব্দের আদিতে ব্যঞ্জন ধ্বনির আগমনকে আদি ব্যঞ্জনাগম বলে ।

যেমন – ওজা > রোজা ।

(ii) মধ্য ব্যঞ্জনাগমঃ- শব্দের মাঝে ব্যঞ্জন ধ্বনির আগমনকে মধ্যব্যঞ্জনাগম বলে ।

যেমন – পোড়ামুখী > পোড়ারমুখী ।

(iii) অন্ত্যব্যঞ্জনাগমঃ- শব্দের শেষে ব্যঞ্জন ধ্বনির আগমনকে অন্ত্য ব্যঞ্জনাগম বলে ।

যেমন – খোকা > খোকন ।

অপিনিহিতিঃ- শব্দের মধ্যে ‘ই’ বা ‘উ’ কার থাকলে তা যদি নির্দিষ্ট স্থানের আগেই উচ্চারিত হয় তাকে অপিনিহিতি বলে ।

যেমন – করিয়া > কইর‍্যা , সাধু > সাউধ ইত্যাদি ।

শ্রুতিধ্বনিঃ- পাশাপাশি দুটি ধ্বনির উচ্চারনের সময় আসাবধানতা বশত বা শ্রুতি মাধুর্যের কারনে ওই দুটি ধ্বনির মাঝে যদি অন্য একটি এসে যায় তাকে শ্রুতি ধ্বনি বলে ।

যেমন – শৃগাল > শিআল > শিয়াল – এখানে ‘গ’ লোপ পেয়ে ‘য়’ এর আগমন ঘটেছে ।

শ্রুতি প্রধানত দুরকম ‘য়’ শ্রুতি ও ‘ব’ শ্রুতি । এছাড়াও ‘দ’, ‘ল’, ‘হ’ , ‘র’ প্রভৃতি শ্রুতি আছে ।

‘য়’ শ্রুতি – মাঝে ‘য়’ এর আগমন ঘটে । যেমন – মোদক > মোঅঅ > মোয়া ।

‘ব’ শ্রুতি – মাঝে ‘ব’ এর আগমন ঘটে । যেমন – যাওয়া > যাবা ।

‘র’ শ্রুতি – পুষ্ট > পুরুষ ।

‘হ’ শ্রুতি – বেয়ারা > বেহারা ।

‘দ’ শ্রুতি – বানর > বাঁদর ।

‘ওয়’ শ্রুতি – যা > যাওয়া ।

(২) ধ্বনির লোপঃ-

শ্বাসাঘাত, দ্রুততা বা অসাবধানতা প্রভৃতি কারনে শব্দের কোনো কোনো ধ্বনি বিলুপ্ত হয়ে যায় একে ধ্বনিলোপ বলে  ।

এই ধ্বনিলোপ দুই প্রকার । যথা – (ক) স্বরধ্বনি লোপ  (খ) ব্যঞ্জন ধ্বনি ।

(ক) স্বরধ্বনি লোপঃ- শব্দের শুরুতে, মাঝে বা শেষে স্বরধনির বিলুপ্ত হওয়া কে বলে          

                                স্বরলোপ ।

এই স্বরলোপ আবার তিন প্রকার। যথা –

(i) আদিস্বর লোপঃ- শব্দের শুরুতে স্বরধ্বনির লোপ হয় । যেমন – অলাবু > লাউ ।

(ii) মধ্য স্বরলোপঃ- শব্দের মাঝে স্বরধ্বনির লোপ হয় । যেমন – ভগিনী > ভগ্নী ।

(iii) অন্ত্যস্বর লোপঃ- শব্দের শেষে স্বরধ্বনির লোপ হয় । যেমন – ভিন্ন > ভিন ।

(খ) ব্যঞ্জনধ্বনি লোপঃ- শব্দের শুরুতে, মাঝে বা শেষে ব্যঞ্জন ধ্বনির বিলুপ্ত হওয়া কে ব্যঞ্জন লোপ বলে  ।

স্বরলোপের মতো ব্যঞ্জনলোপ ও তিন প্রকার । যথা –

(i) আদিব্যঞ্জন লোপঃ- শব্দের শুরুতে ব্যঞ্জনধ্বনির লোপ হয় । যেমন – স্থান > থান ।

(ii) মধ্যব্যঞ্জন লোপঃ- শব্দের মাঝে ব্যঞ্জনধ্বনির লোপ হয় । যেমন – ফলাহার > ফলার ।

(iii) অন্ত্যব্যঞ্জন লোপঃ-  শব্দের শেষে ব্যঞ্জনধ্বনির লোপ হয় । যেমন – গাত্র > গা ।

এছাড়াও আরও দুই ধরনের ধ্বনিলোপ আছে । তা হল – সমাক্ষরলোপ ও সমবর্ণ লোপ ।

(১) সমাক্ষরলোপঃ- পাশাপাশি অবস্থিত দুটি সমঅক্ষরের মধ্যে একটির লোপ হয় ।      

                              যেমন – বড়দিদি > বড়দি , পটললতা > পলতা ।


(২) সমবর্ণ লোপঃ- পাশাপাশি অবস্থিত দুটি সমবর্ণ শুধুমাত্র লেখার বানানে লোপ পায়,

                            উচ্চারণ ঠিকই থাকে । যেমন – কৃষ্ণনগর > ক্রিশ্নোনগোর ।

৩।ধ্বনির রুপান্তরঃ-

শব্দের মধ্যে অবস্থিত কোন স্বরধ্বনি বা ব্যঞ্জন ধ্বনি যদি একে অপরের সঙ্গে স্থান পরিবর্তন করে তখন তাকে ধ্বনির রপান্তর বলে । যেমন – মিটকেশ > মিশকেট ।

ধ্বনির রূপান্তর নানা রকমের হয়ে থাকে । যেমন – অভিশ্রুতি, স্বরসংগতি, সমীভবন, বিষমীভবন, ঘোষীভবন, অঘোষীভবন, মহাপ্রাণীভবন, অল্পপ্রানীভবন, মূর্ধ্যণীভবন, স্বতঃমূর্ধ্যণীভবন, উষ্মীভবন, নাসিক্যীভবন, সকারীভবন, রকারীভবন, ধ্বনি সংকোচন ও ধ্বনি সম্প্রসারন ।

 

(i) অভিশ্রুতিঃ- অপিনিহিতির পরের স্তর  হল অভিশ্রুতি । অপিনিহিতির ‘ই’ বা ‘উ’ যদি লোপ পায় বা নতুন রূপ লাভ করে তাকে অভিশ্রুতি বলে ।

যেমন – রাতি > রাইত > রাত ।

কালি > কাইল > কাল ।

(ii) স্বরসংগতিঃ- শব্দ মধ্যস্থিত পাশাপাশি অবস্থিত দুটি পৃথক স্বরধ্বনি একে অপরকে প্রভাবিত করে একই রকম স্বরধ্বনিতে রূপান্তরিত হয় ।

যেমন – বিলাতি > বিলিতি , সুপারি > সুপুরি ।

স্বরসংগতি চার রকমের – প্রগত, পরাগত, মধ্যগত, ও অন্যোন্য ।

প্রগতঃ- পূর্ববর্তী স্বরের সঙ্গে পরবর্তী স্বরের সংগতি । যেমন – হিসাব > হিসেব ।

পরাগতঃ- পরবর্তী স্বরের সঙ্গে পূর্ববর্তী স্বরের সংগতি । যেমন – দেশি > দিশি ।

মধ্যগতঃ- পূর্ব বা পরবর্তী স্বরের প্রভাবে মধ্যবর্তী স্বরের সংগতি । যেমন – বিলাতি > বিলিতি ।

অন্যোন্যঃ- পূর্ববর্তী বা পরবর্তী পারস্পরিক প্রভাবে পারস্পরিক পরিবর্তন । যেমন – শোনা > শুনা , নাটকিয়া > নাটুকে ।

(iii) সমীভবনঃ- শব্দ মধ্যস্থিত পাশাপাশি অবস্থিত দুটি পৃথক ব্যঞ্জনধ্বনি একে অপরকে প্রভাবিত করে একই রকমব্যঞ্জন ধ্বনিতে রূপান্তরিত হয় ।

সমীভবন তিন রকমের – প্রগত, পরাগত, অন্যোন্য ।

প্রগতঃ– পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সঙ্গে পরবর্তী ব্যঞ্জনের সংগতি । যেমন – চক্র > চক্ক, পদ্ম > পদ্দ,

পরাগতঃ- পরবর্তী ব্যঞ্জনের সঙ্গে পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সংগতি । যেমন – গল্প >  গপ্প , কর্পূর > কপ্‌পূর ।

অন্যোন্যঃ- পূর্ববর্তী বা পরবর্তী ব্যঞ্জনের পারস্পরিক প্রভাবে পারস্পরিক পরিবর্তন । যেমন – বৎসর > বছর , মৎস্য > মচ্ছ ।

(iv) বিষমীভবনঃ- সমীভবনের বিপরীত প্রক্রিয়া হল বিষমীভবন ।পাশাপাশি অবস্থিত সমধ্বনি পৃথক ধ্বনিতে রূপান্তরিত হয় । যেমন – লাল > নাল ।

আজকের বিষয়ের PDF টি ডাউনলোড করতে নীচের ডাউনলোড বটনে ক্লিক করো -