ভারতীয় সংবিধানে নতুন রাজ্যগঠন ও নাম পরিবর্তন
নতুন রাজ্য গঠন এবং অঞ্চল ও সীমানা বা রাজ্যের
নামের পরিবর্তনঃ-
v
অনুচ্ছেদ ৩ এ
বলা হয়েছে সংবিধান সংসদকে এই ক্ষমতা দিয়েছে যে সংসদ কোন রাজ্য থেকে কোন অঞ্চল আলাদা
করে, অথবা দুই বা ততোধিক রাজ্য কিংবা রাজ্যের অংশ সংযুক্ত করে অথবা কোন অঞ্চলকে কোন
রাজ্যের একাংশের সঙ্গে সংযুক্ত করে এক নতুন রাজ্য গঠন করতে পারে ।
v
সংবিধানে আরও
বলা হয়েছে সংসদ কোন রাজ্যের আয়তন বৃদ্ধি করতে পারেনা, হ্রাস করতে পারে সীমানা পরিবর্তন
করতে পারে অথবা কোন রাজ্যের নাম পরিবর্তন করতে পারে ।
১৯৫০
সালের পর তৈরি হওয়া নতুন রাজ্যের তালিকা
অন্ধ্রপ্রদেশ - অন্ধ্র রাজ্য
আইন ১৯৫৩ দ্বারা মাদ্রাজ রাজ্য থেকে কিছু এলাকার করে এনে অন্ধ নামে এক নতুন রাজ্য তৈরি
করা হয়েছে ।
গুজরাট ও মহারাষ্ট্র -- বোম্বে পুনর্গঠন আইন ১৯৬০ অনুযায়ী বোম্বে
রাজ্যকে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট নামে দুটি রাজ্যে বিভক্ত করা হয় ।
কেরালা -- ত্রিবাঙ্কুর ও কোচি
অঞ্চল নিয়ে রাজ্য পুনর্গঠন আইন ১৯৫৬ অনুযায়ী কেরালা রাজ্যটি তৈরি হয়।
কর্ণাটক -- মহীশূর নামক দেশীয়
রাজ্য থেকে রাজ্য পুনর্গঠন আইন ১৯৫৬ অনুযায়ী তৈরি হয় এবং ১৯৭৩ সালে কর্ণাটক নামে
অভিহিত হয় ।
নাগাল্যান্ড -- নাগাল্যান্ড
রাজ্য আইন ১৯৬২ অনুযায়ী অসম রাজ্যের অংশ নিয়ে এই রাজ্যটি গঠিত হয় ।
হরিয়ানা -- পাঞ্জাব রাজ্য পুনর্গঠন
আইন ১৯৬৬ দ্বারা পাঞ্জাব রাজ্যের অংশ নিয়ে রাজ্যটি গঠিত হয় ।
হিমাচল প্রদেশ -- হিমাচল প্রদেশ
রাজ্য আইন ১৯৭০ অনুযায়ী হিমাচল প্রদেশকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে রাজ্যে উন্নীত করা
হয় ।
মেঘালয় -- প্রথমে ১৯৬৬ সালের
২৩তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে অসম রাজ্যের অভ্যন্তরে মেঘালয় নামে একটি রাজ্য গঠিত
হয় । পরবর্তীকালে ১৯৭১ সালে উত্তর-পূর্বাঞ্চল পুনর্গঠন আইন ১৯৭১ অনুযায়ী এটি পূর্ণ
রাজ্যের মর্যাদা লাভ করে ।
মনিপুর ও ত্রিপুরা -- এই দুটি
রাজ্য উত্তর-পূর্বাঞ্চল পুনর্গঠন আইন ১৯৭১ অনুযায়ী কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে রাজ্যে
উন্নীত হয় ।
সিকিম -- ১৯৭৪ সালের ৩৫তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে
সিকিমকে প্রথমে সহযোগী রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয় । ১৯৭৫ সালের ৩৬তম সংবিধান সংশোধনের
দ্বারা সিকিম স্বতন্ত্র রাজ্য হিসেবে পরিচিত হয় ।
মিজোরাম -- মিজোরাম রাজ্য আইন
১৯৮৬ অনুযায়ী মিজোরামকে রাজ্য হিসেবে উন্নীত করা হয় ।
অরুণাচল প্রদেশ -- অরুণাচল
প্রদেশ রাজ্য আইন ১৯৮৬ অনুযায়ী একে রাজ্য হিসেবে গণ্য করা হয় ।
গোয়া -- গোয়া-দমন-দিউ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে
গোয়া-দমন-দিউ পুনর্গঠন আইন ১৯৮৭ অনুযায়ী গোয়া কে আলাদা করা হয় এবং পূর্ণ রাজ্যের
মর্যাদা দেয়া হয় । কিন্তু দমন ও দিউ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবেই রয়ে যায় ।
ছত্তিশগড় -- সংবিধান সংশোধন আইন ২০০০ দ্বারা মধ্যপ্রদেশকে ভাগ করে এই রাজ্য
১লা নভেম্বর ২০০০ সালে গঠিত হয় ।
উত্তরাখণ্ড -- সংবিধান সংশোধন আইন
২০০০ অনুযায়ী উত্তরপ্রদেশকে বিভক্ত করে এই রাজ্য ৯ই নভেম্বর ২০০০ সালে গঠিত হয় ।
ঝাড়খন্ড -- সংবিধান সংশোধন আইন
২০০০ অনুযায়ী বিহার কে বিভক্ত করে এই রাজ্য ১৫ ই নভেম্বর ২০০০ সালে গঠিত হয় ।
তেলেঙ্গানা -- অন্ধপ্রদেশ রাজ্য পুনর্গঠন
আইন ২০১৪ অনুযায়ী অন্ধপ্রদেশ কে বিভক্ত করে এই রাজ্য ২রা জুন ২০১৪ সালে গঠিত হয় ।
রাজ্য পুনর্গঠন পদ্ধতিটি নিম্নরূপঃ
v
উপরিউক্ত সবকটি
বা কোন একটি কারণে যদি রাজ্য পুনর্গঠন করার প্রয়োজন হয় তাহলে এই সম্বন্ধে একটি বিধেয়ক
শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতির সুপারিশ ক্রমে সংসদের যে কোন পক্ষে পেশ করা যাবে ।
v
যে ক্ষেত্রে
বিধেয়কে বর্ণিত প্রস্তাবে কোন রাজ্যের আয়তন সীমানার নাম পরিবর্তন ঘটানো হবে সেক্ষেত্রে
রাষ্ট্রপতি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই পরিবর্তন সম্পর্কে মত প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট
রাজ্যের বিধানসভার কাছে বিধেয়কটি পাঠাতে পারেন । রাষ্ট্রপতি এর জন্য অতিরিক্ত সময়ও
মঞ্জুর করতে পারেন ।
v
যদি রাজ্য বিধানসভা
নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে তার মত প্রকাশে অপরাগ হয় তাহলে সে তার মত প্রকাশ করেছে
বলেই ধরা হবে । নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে মতামত জানালেও সংসদ সেই মতামত গ্রহণ করতে
বা তার ভিত্তিতে কাজ করতে বাধ্য নন । তাছাড়া বিধেয়কে কোন সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রতিবার
তা গ্রহণ বা প্রস্তাবিত করার জন্য রাজ্য বিধানসভায় পাঠানোর আবশ্যকতা নেই ।
v
বিষয়টি সাধারণ
সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাস করানো যাবে ।
v
যদিও, কেন্দ্রশাসিত
অঞ্চলের ক্ষেত্রে সীমানা বা নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত কোন বিধেয়ক সংশ্লিষ্ট বিধান মণ্ডল
এর কাছে পাঠানোর আবশ্যকতা নেই ।
নতুন রাজ্যগঠন ও নাম পরিবর্তন সম্পর্কে জানুন ।